রাজবাড়ীতে ওসির বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে মামলার মোড় ঘু্ড়িয়ে জোর কর বাদীর স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

বিশেষ প্রতিবেদক:

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করাকে কেন্দ্র করে সংঘাতের সৃষ্টি হলে বাড়ী থেকে তুলে পিটিয়ে হত্যা করা হয় রুপল শেখ নামে এক যুবককে। নিহত রুপল রাজাপুর গ্রামের জিন্নাত শেখের ছেলে । রুপল পেশায় ভ্যান চালক ছিলেন।

গত শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তাকে বেধে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনায় ১৮মে (রবিবার) রুপলের হত্যার প্রতিবাদে হত্যাকারী শাম বিশ্বাস, মুক্তার বিশ্বাস, রাফিজুল বিশ্বাস, রিপন বিশ্বাস, সৌরভ বিশ্বাস, রাসেল বিশ্বাস, ও অন্তর বিশ্বাস নামে আসামীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন করে এলাকা বাসী ।

এসময় রাজবাড়ী সদর থানার এস আই সাব্বির হোসেন মামলার তদন্তে গেলে মূল আসামীদের গ্রেফতার না করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়,পরে স্থানীয়দের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে হামলার শিকার হন এস আই সাব্বির হোসেন । পরে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এ ঘটনায় দুইজন কে আটক করেছে পুলিশ । এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ মোটা অংকের টাকা খেয়ে নির্দোষদের গ্রেফতার করেছে আর মূল আসামীদেরকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে । তারা পুলিশের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । মামলাককে ভিন্ন দিকে মোড় দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ।

এ বিষয়ে মামলার বাদী নিহত রুপলের মামা কালাম মোল্লা জানান, তিনি নিজেই জানেন না মামলায় আসামী কারা , থানার ওসি তাকে জোড় করে ধরে এনে মামলায় স্বাক্ষর করান , আর যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা নির্দোষ ।

তিনি আরো জানান, সদর থানার ওসি আমাকে রাতে ধরে নিয়ে যায়, মামলায় আমার স্বাক্ষর নেয় ,আমি জানিনা কারা আসামী , আমাকে জানানোও হয় নি, আমি মূর্খ মানুষ, আমাকে ভোরে বাড়ীতে দিয়ে আসে । থানা পুলিশ টাকা খেয়ে মূল আসামীদের কে আড়াল করেছে আর যাদের ধরেছে তারা নির্দোষ । মামলার আসামী পক্ষের শাম বিশ্বাস অনেক টাকার মালিক । টাকার কাছে আমরা দূর্বল। প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানান তিনি ।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান জানান ঘটনার সাথে জড়তদেরকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোঃ জহিরুদ্দিন বিশ্বাস, মোঃ মৈজদ্দি বিশ্বাস, মোঃ ফরহাদ বিশ্বাস, মোঃ মুন্নু মোল্লা সহ মোট ৩জন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বচ্ছতার সাথে মামলা দেখবাল করা হচ্ছে ।

এই প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে মামলা পরিচালিত হয়েছে , এজাহারের পর আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে , অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে । এ মামলায় পুলিশ কোন টাকা পয়সা বা অনৈতিক সুবিধা নেয় নি । ‘

এ বিষয়ে সচেতন মহল মনে করছে, মামলার বাদী কালাম মোল্লার বক্তব্য অনুযায়ী তাকে পুলিশ জোর করে ধরে এনে মামলায় স্বাক্ষর করান, এজাহারের আগেই আসামী গ্রেফতার করা হয় এবং এ ঘটনায় মানববন্ধনের পুলিশের উপর হামলা করা হয় অন্যদিকে আসামী পক্ষের শাম বিশ্বাসেরা ধনী ও সংখ্যাঘরিষ্ট – প্রভাবশালী, মূল আসামীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন ,তদন্তকারী কর্মকর্তার উপর হামলা সব কিছু মিলিয়ে বোঝা যায় মামলা ভিন্ন ভাবে ঘোরানো হয়েছে থানা পুলিশের মাধ্যমে ।

এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপার চলছে । নেটিজেনেরা থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করছে আর কমেন্টে দেখা গেছে পুলিশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মতামত ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *