ফরিদপুরে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে পলাতক এক ইউপি চেয়ারম্যান : অপসারণের দাবি

নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর প্রতিনিধি:


ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান মো. ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়ার অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সালথা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তারা চেয়ারম্যানের নানা দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও পরিষদে অনুপস্থিতির অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবু মোল্যা। তিনি জানান, ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া বিগত স্বৈরাচার আমলে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরপর দুইবার নির্বাচিত হন এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর আশীর্বাদে।

তবে চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই তিনি একের পর এক প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ওয়ান পার্সেন্ট, ভিজিডি, গর্ভবতী ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এমনকি ভিজিএফের চাল বিতরণেও দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ করা হয়। এসব প্রকল্পের অধিকাংশ কাজই তিনি বাস্তবায়ন না করেই অর্থ উত্তোলন করেন। ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ সদস্যদের মতামত ও অংশগ্রহণ উপেক্ষা করেছেন, ফলে ইউনিয়নের জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

৫ আগস্ট ২০২৩ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান এবং এরপর থেকে আর পরিষদে আসেননি। তার অনুপস্থিতিতে ইউনিয়নের দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর গাড়ি ভাঙচুর মামলাসহ একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্যরা জোর দাবি জানান, যত দ্রুত সম্ভব চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়াকে অপসারণ করে প্যানেল চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম সচল করতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হতে থাকবে।

অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার মো. ফারুকুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান জানান, “চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।”

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, “চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *